Type to search

Lead Story আন্তর্জাতিক

বিদেশি সিনেমার ওপর ১০০ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা ট্রাম্পের

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবার শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছেন বিদেশে নির্মিত সিনেমার ওপর। বাইরের দেশ থেকে আমদানি করা সিনেমার ওপর ১০০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করার কথা জানিয়েছেন তিনি।

ডোনাল্ড ট্রাম্প দাবি করেছেন, বিদেশি প্রণোদনার কারণে হলিউড দ্রুত পতনের মুখে, যা যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি।

বিবিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী, স্থানীয় সময় রোববার (৪ মে) নিজের মালিকানাধীন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে এ ঘোষণা দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।

পোস্টে তিনি বলেন, ‘অন্যান্য দেশ তাদের চলচ্চিত্র নির্মাতা এবং স্টুডিওগুলোকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে দূরে সরিয়ে নেয়ার জন্য বিভিন্ন ধরনের উৎসাহ দিচ্ছে। হলিউড এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অন্যান্য অনেক অঞ্চল ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। এটি আমাদের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি।’

পোস্টে ট্রাম্প আরও বলেন, ‘এটি, অন্য সবকিছুর পাশাপাশি একটি বার্তা ও প্রচারণা। আমি বাণিজ্য বিভাগ এবং ইউএসটিআরকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আসা সমস্ত বিদেশি-প্রযোজিত চলচ্চিত্রের ওপর ১০০ শতাংশ শুল্ক আরোপের প্রক্রিয়া শুরু করার অনুমোদন দিচ্ছি।’

পরে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্প দাবি করেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ‘এখন খুব কম সিনেমা’ তৈরি হচ্ছে।

তিনি বলেন, ‘অন্যান্য দেশ, যাদের অনেকেই, আমাদের চলচ্চিত্র শিল্প চুরি করেছে। যদি তারা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভেতরে সিনেমা তৈরি করতে ইচ্ছুক না হয়, তাহলে আমাদের এখানে যেসব সিনেমা আসছে তার ওপর শুল্ক আরোপ করা উচিত।’

তবে এ ধরনের শুল্ক আরোপ কীভাবে কার্যকর হবে সে সম্পর্কে ট্রাম্প বিস্তারিত কিছু বলেননি। এমনকি হলিউডের বিভিন্ন চলচ্চিত্রের ক্ষেত্রেও এটি প্রযোজ্য হবে কি না তাও উল্লেখ করেননি।

চীনা পণ্যের ওপর ১৪৫ শতাংশ মার্কিন শুল্ক আরোপের পর দেশটি পাল্টা পদক্ষেপ নিয়েছিল। তার মধ্যে ছিল চলচ্চিত্র শিল্পও। ১০ এপ্রিল চীনের চলচ্চিত্র প্রশাসন এক ঘোষণায় জানিয়েছে, চীনের ওপর শুল্ক আরোপের মার্কিন সরকারের ভুল পদক্ষেপ অনিবার্যভাবে আমেরিকান চলচ্চিত্রের প্রতি দেশীয় দর্শকদের আগ্রহ আরও কমিয়ে দেবে।

এতে বলা হয়, আমরা বাজারের নিয়ম মেনে চলব, দর্শকদের পছন্দকে সম্মান করব এবং আমদানি করা আমেরিকান চলচ্চিত্রের সংখ্যা মাঝারিভাবে কমিয়ে আনব।

জানুয়ারিতে দ্বিতীয় মেয়াদে হোয়াইট হাউসে ক্ষমতায় আসার পর ট্রাম্প চীনের সঙ্গে বাণিজ্য যুদ্ধ শুরু করেছেন। এছাড়াও তিনি বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ওপর শুল্ক আরোপ করেছেন যা বৈশ্বিক বাজারে অনিশ্চয়তা তৈরি করেছে।

যদিও এই ঘোষণার আগে ট্রাম্প সিলভেস্টার স্ট্যালোন, মেল গিবসন এবং জন ভয়েটকে ‘বিশেষ দূত’ হিসেবে নিয়োগ দেন, যারা হলিউডের হারানো ব্যবসা ফিরিয়ে আনার দায়িত্বে থাকবেন। তিনি বলেন, এই অভিনেতারা তার ‘চোখ ও কান’ হিসেবে কাজ করবেন এবং একইসঙ্গে তিনি ‘হলিউডের সোনালী যুগ’ ফিরিয়ে আনার পরিকল্পনা করবেন।

হলিউড সাম্প্রতিক বছরগুলোতে কঠিন ব্যবসায়িক পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে কোভিড-১৯ মহামারির প্রভাব এবং ২০২৩ সালের অভিনেতা ও লেখকদের ধর্মঘটের বিষয়টিও রয়েছে।

এছাড়া ২০২৪ সালে হলিউড স্টুডিওগুলো বিশ্বব্যাপী প্রায় ৩০ বিলিয়ন ডলার আয় করেছে, যা ২০২৩ সালের তুলনায় প্রায় ৭ শতাংশ কম।

বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন, এই শুল্কের ফলে আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র বাজারে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান দুর্বল হতে পারে এবং অন্যান্য দেশ পাল্টা ব্যবস্থা নিতে পারে, যা মার্কিন চলচ্চিত্র শিল্পের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।

-বিবিসি

Translate »