ক্যান্সার আগেই ধরা পড়ার কথা অস্বীকার করলো বাইডেন শিবির

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সম্প্রতি প্রোস্টেট ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়েছেন বলে জানা গেছে। এই তথ্য সামনে আসার পর থেকেই কবে এই রোগ ধরা পড়েছিল, তা নিয়ে নানা বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষ করে বর্তমান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পসহ বাইডেনের সমালোচকরা বলছেন, এই রোগ আগেই ধরা পড়েছিল, কিন্তু বিষয়টি ইচ্ছা করেই গোপন রাখা হয়েছিল।
তবে বাইডেনের অফিস পরিষ্কার ভাবে জানিয়ে দিয়েছে, এই ক্যান্সার এর আগে কখনও ধরা পড়েনি। তারা জানিয়েছে, ২০১৪ সালে বাইডেনের সর্বশেষ প্রোস্টেট-সংক্রান্ত রক্ত পরীক্ষা হয়েছিল এবং তখন সেটি স্বাভাবিক ছিল। এর মানে, শুক্রবারের আগে কখনও তার প্রোস্টেট ক্যান্সার ধরা পড়েনি।
বাইডেনের শিবিরের এই বিবৃতি এসেছে ঠিক তখন, যখন ট্রাম্প অভিযোগ তুলেছেন যে বাইডেনের ক্যান্সার আগেই ধরা পড়েছিল, কিন্তু জনগণকে জানানো হয়নি। ট্রাম্প বলেন, ‘এত দেরি করে জানানো হলো কেন? এমন অসুস্থতার কথা লুকোনো হয়েছে। এটা একটা বড় সমস্যা।’
বাইডেনের অফিস পরে জানায়, ক্যান্সারটি এখন তার হাড়েও ছড়িয়ে পড়েছে এবং গ্লিসন স্কেলে এটি ৯ পেয়েছে, যা ক্যান্সারের একটি মারাত্মক ধরণ। কিছু চিকিৎসক সন্দেহ করছেন, বাইডেনের মতো একজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির রোগ এত দেরিতে ধরা পড়া অস্বাভাবিক ঘটনা। তবে অন্যরা বলছেন, তার বয়স বিবেচনায় বিষয়টি একেবারে অস্বাভাবিক নয়। অনেক সময় বয়স বেশি হলে প্রোস্টেট ক্যান্সারের নিয়মিত পরীক্ষা আর করার পরামর্শ দেয়া হয় না, কারণ এতে অপ্রয়োজনীয় চিকিৎসার ঝুঁকি থাকে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কিছু প্রোস্টেট ক্যান্সার এমনও হয় যেগুলো পরীক্ষায় ধরা পড়ে না। তাই দেরিতে ধরা পড়াটা অসম্ভব নয়।
বাইডেন ক্যান্সারে আক্রান্তের খবর লুকিয়েছেন বলে ট্রাম্প অভিযোগ করেছেন। ছবি: সংগৃহিত
বাইডেনের বয়স এখন ৮২। তার বয়স ও শারীরিক অবস্থা নিয়ে আগে থেকেই মার্কিন ভোটারদের মধ্যে উদ্বেগ ছিল, বিশেষ করে যখন তিনি আবার নির্বাচনে লড়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন। এর মধ্যে ক্যান্সারের খবর সামনে আসায় বিতর্ক আরও বেড়েছে।
সাম্প্রতিক এক বই ‘অরিজিনাল সিন’-এ দাবি করা হয়েছে, বাইডেনের শারীরিক ও মানসিক অবস্থার অবনতি অনেক আগেই শুরু হয়েছিল এবং তা তার দল ইচ্ছাকৃতভাবে লুকিয়ে রেখেছিল। বইটিতে এমন একটি ঘটনার কথাও বলা হয়েছে, যেখানে দাবি করা হয়েছে যে বাইডেন একটি তহবিল সংগ্রহ অনুষ্ঠানে অভিনেতা জর্জ ক্লুনিকে চিনতেই পারেননি।
সব মিলিয়ে, বাইডেনের ক্যান্সার ধরা পড়া, তার সময়কাল, এবং তার শারীরিক অবস্থা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে রাজনৈতিক অঙ্গনে তীব্র বিতর্ক চলছে। যদিও তার অফিস ও চিকিৎসকরা বলছেন বিষয়টি স্বাভাবিক, তবুও অনেকেই মনে করছেন জনগণকে আরও আগে জানানো উচিত ছিল।
তথ্যসূত্র: আল জাজিরা