Type to search

Lead Story রাজনীতি

জনদাবির মুখে ছাত্র উপদেষ্টাদের ঠেলে দেওয়ার আচরণ সন্দেহজনক

রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় বুধবার রাতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠক শেষে কাকরাইল মসজিদ মোড়ে সাংবাদিকদের ব্রিফিং করতে আসলে হামলার শিকার হন তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম। ব্রিফিং চলাকালীন তার দিকে পানির বোতল ছুড়ে মারেন ছাত্রদের মধ্যে কোনো স্যাবোটাজ গ্রুপ। যা নিয়েই এবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ক্ষোভ ঝেড়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ।

ঘটনার পর রাতেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন হাসনাত। যেখানে সমস্যা সমাধানে যাওয়া মাহফুজকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করা কোনভাবেই প্রত্যাশিত নয় বলে জানান তিনি। একই সঙ্গে সকল জনদাবির মুখে ছাত্র উপদেষ্টাদের ঠেলে দেওয়া নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের আচরণের বিষয়েও সন্দেহ প্রকাশ করেছেন হাসনাত।

হাসনাত তার পোস্টে লিখেছেন, ‘একজন রাষ্ট্রীয় প্রতিনিধি হিসেবে মাহফুজ আলম সমস্যা সমাধানে গিয়েছিলেন, তাকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করা কোনভাবেই প্রত্যাশিত নয়।’

তিনি আরও লিখেছেন, ‘এ কথা স্পষ্টভাবে মনে রাখা প্রয়োজন—আপনাদের প্রতিনিধিত্বের দাবি বলেই তিনি আপনাদের কাছে এসেছেন। কিন্তু এ ধরনের উগ্র ও হঠকারী আচরণ ভবিষ্যতে কোনো ইতিবাচক ফল বয়ে আনবে না, বরং গণতান্ত্রিক আন্দোলনের গ্রহণযোগ্যতাকেই প্রশ্নবিদ্ধ করবে।’

মাহফুজের ওপর হামলায় আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়াদের প্রকাশ্যে দুঃখ প্রকাশ করা উচিত জানিয়ে হাসনাত লিখেছেন, ‘মাহফুজ আলম আইনি পথে হাঁটবে কি না জানি না, তবে আন্দোলনের নেতৃত্বের উচিত প্রকাশ্যে দুঃখ প্রকাশ করা এবং ভবিষ্যতে এমন ন্যক্কারজনক আচরণ পুনরাবৃত্তি না হওয়ার নিশ্চয়তা দেওয়া। সমালোচনা গণতান্ত্রিক অধিকার—কিন্তু শারীরিক লাঞ্ছনা বর্বরতা, এবং সেটির কোনো যুক্তিসঙ্গত ব্যাখ্যা নেই।’

সকল জনদাবির মুখে ছাত্র উপদেষ্টাদের ঠেলা দেওয়াকে সন্দেহজনক জানিয়ে হাসনাত লিখেছেন, ‘অন্যদিকে অন্তর্বর্তী সরকারের আচরণও সন্দেহজনক। সকল জনদাবির সম্মুখে ছাত্র উপদেষ্টাদের ঠেলে দিয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টারা নিজেদের দায়িত্ব এড়িয়ে যাওয়ার প্রবণতা স্পষ্ট। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বারবার আশ্বাস দেওয়া হলেও সেটির বিষয়ে কেন এখনও যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি, সেটিও এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে স্পষ্ট করতে হবে।’

এর আগে, বুধবার বেশ কিছু দাবি নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনায় যায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ও শিক্ষকরা। সেখানে পুলিশের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ হয়। পরে রাতে বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষকদের সঙ্গে আলোচনা করে রাতে ছাত্রদের ব্রিফিং করতে আসেন উপদেষ্টা মাহফুজ। সেখানে তার ওপর হামলা হয়।

এদিন ব্রিফিংয়ে শিক্ষার্থীদের দাবির বিষয়ে উপদেষ্টা মাহফুজ বলেন, সকাল থেকে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসনের সমস্যা সমাধানের জন্য শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করেছেন। তারা তিনটি দাবি দিয়েছেন। সেগুলোর যৌক্তিকতা আছে কি নেই, এটা শিক্ষা মন্ত্রণালয় বিচার করে দেখবে। যে বিশ্ববিদ্যালয়ে আবাসন সংকটে আছে, আমাদের সরকার তা সুনজরে দেখবে। আগামী বাজেটে যাতে তাদের আবাসন ভাতা ৭০ শতাংশ করা হয় দাবি তুলেছেন। সেটা কত শতাংশ করা যায়, সেটাও আলোচনাসাপেক্ষ। দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ ত্বরান্বিত করার কথা বলেছেন। আমরা আশা করি, শিগগিরই কাজগুলো হবে। তবে আরেকটি দাবি হচ্ছে, বাজেট না কমানোর জন্য বা সামনে বাজেটে জন্য বরাদ্দ বাড়িয়ে দেওয়া হয়। আমরা আশা করি দ্রুত প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন এবং স্টক হোল্ডারদের সঙ্গে বসার সম্ভাবনা তৈরি হবে। দ্রুত এ সমস্যা সমাধান হবে।

-যুগান্তর

Translate »