আলোচনা-সমালোচনায় দাপট দেখাচ্ছে ‘দ্য কাশ্মির ফাইলস’

মুক্তির পর থেকেই আলোচনা-সমালোচনার কেন্দ্রে রয়েছে ‘দ্য কাশ্মির ফাইলস’ সিনেমাটি। বিবেক অগ্নিহোত্রী পরিচালিত ১৫ কোটির বাজেটের এই সিনেমাটি মাত্র ১৩ দিনে বক্স অফিসে আয় করেছে ২০০ কোটি বেশি।
এর মাঝে ‘রাধে শ্যাম’, ‘বচ্চন পাণ্ডে’র মতো বিগ বাজটে ও তারকাবহুল সিনেমাগুলো মুক্তি পেলেও এতটুকু প্রভাব পড়েনি অনুপম খের, মিঠুন চক্রবর্তী, পল্লবী যোশী, দর্শন কুমার অভিনীত এই সিনেমাটিতে। এরইমধ্যে সিনেমাটি ভারতের সাড়া জাগানো সিনেমা ‘বাহুবলী’র রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে। পাশাপাশি খুব অল্প সময়ে এবং নতুন বছরে দ্রুত ২০০ কোটির ক্লাবে প্রথম জায়গা করে নিয়েছে সিনেমাটি। যা বলিউড ইন্ডাস্ট্রিতে ঐতিহাসিক অর্জন বলে মনে করছেন বোদ্ধারা। এছাড়া সিনেমাটি শুরুতে তিন শতাধিক সিনেমাহলে মুক্তি পেলেও দ্বিতীয় সপ্তাহে ৬ হাজার ছাড়িয়েছে।
তবে একদিকে সিনেমাটি যেমন দর্শকের আগ্রহে আছে, অপরদিকে সিনেমাটিকে ঘিরে বিতর্কও দেখা যাচ্ছে ভারতে। অনেকেই বলছেন, অনেকটাই কাল্পনিক গল্পে সিনেমাটি নির্মিত হয়েছে। যা হিন্দু-মুসলিম বিদ্বেষ বাড়াবে। আবার অনেকেই বলছেন, ভারতীয়দের একবারের জন্য হলেও সিনেমাটি দেখা উচিত। এই তালিকায় বলিতারকা থেকে শুরু করে দর্শক-সমালোচক অনেকেই রয়েছেন। এমনকি সিনেমাটি ঘিরে উত্তপ্ত হয়েছে ভারতের রাজনৈতিক অঙ্গনও।
সিনেমাটিকে হাতিয়ার হিসেবে বিজেপি ব্যবহার করছে বলে দাবি কংগ্রেসের। ২০১৯ সালে ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মিরের বিশেষ সব সুবিধা বাতিল করার সমালোচনা ঢাকতে চাইছেন মোদি সরকার। নিয়ম করে সেখানে অন্য ভারতীয়দের প্রতিষ্ঠা করার জোর পদক্ষেপ কেন জরুরি, তার উত্তর হিসেবে এই ছবির সন্ত্রাসবাদকে বেছে নিয়েছে এই সরকার।
অনেকের মতে, এতে মুসলিম বিদ্বেষও ফুটে উঠেছে। কারণ সিনেমাটিতে একজন মুসলমানকেও ভালো বলে উপস্থাপন করা হয়নি। তবে সিনেমাটির অভিনেত্রী পল্লবী যোশী জানিয়েছেন, প্রায় ৪-৫ বছর গবেষণা করে সিনেমাটি নির্মাণ করেছেন বিবেক অগ্নিহোত্রী। ফলে এখানে ভুল থাকার প্রশ্নই ওঠে না। তিনি প্রয়োজনে সমালোকদের সিনেমাটি নিয়ে গবেষণা করতে বলেছেন।
উল্লেখ্য, ১৯৯০ সালে ১ লাখেরও বেশি কাশ্মিরি পণ্ডিত তাদের বাড়ি ছেড়ে যেতে বাধ্য হয়েছিলেন। তাদের রাতারাতি গৃহহীন করা হয়েছিল। কাশ্মিরে মানুষ হত্যা ও আতঙ্ক ছড়ানোর কাজ শুরু হয়ে ১৯৮৯ সাল থেকে। বিট্টা কারাটা ওরফে ফারুক আহমেদ দার সেই সময় উপত্যকায় আতঙ্কের আরেক নাম হয়ে ওঠে। তিনি কাশ্মিরি পণ্ডিতদের খুঁজে বের করে খুন করতেন। তাকে নিয়েই সিনেমার গল্প এগিয়েছে।
এবিসিবি/এমআই