Type to search

Lead Story রাজনীতি

সুপরিকল্পিতভাবে নির্বাচন পেছানোর পাঁয়তারা চলছে: মির্জা ফখরুল

সুপরিকল্পিতভাবে জাতীয় নির্বাচন পেছানোর ষড়যন্ত্র চলছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

মঙ্গলবার রাজধানীর গুলশানে চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে বিএনপি এবং এর অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের যৌথসভা শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে ভার্চুয়ালি তিনি এ কথা বলেন। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ৪৪তম শাহাদতবার্ষিকী উপলক্ষে এ যৌথসভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় থাইল্যান্ডের ব্যাংককের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকা মির্জা ফখরুল ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে সভাপতিত্ব করেন।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, হাজার হাজার ছাত্র-জনতার রক্তের বিনিময়ে নতুন একটা সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে। গণতন্ত্রকে প্রতিষ্ঠিত করার এবং সত্যিকার অর্থে ফ্যাসিবাদ মুক্ত যে একটি আধুনিক বাংলাদেশকে প্রতিষ্ঠা করার, সেখানেও আমরা দেখি একটা কালো ছায়া এসে দাঁড়িয়েছে। অত্যন্ত সুপরিকল্পিতভাবে নির্বাচনকে পিছিয়ে দেওয়া, জনগণের যে অধিকার সেই অধিকার থেকে তাদের বঞ্চিত করা এবং ভোটের অধিকার থেকে বঞ্চিত করার একটা পাঁয়তারা শুরু হয়েছে।

আবার বিভাজনের রাজনীতি শুরু হয়েছে মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, এখানে গোত্রে গোত্রে বিভাজন সৃষ্টির চেষ্টা করা হচ্ছে। সরকারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানগুলোকে পরস্পর মুখোমুখি করার একটা ষড়যন্ত্র ও চক্রান্ত শুরু হয়েছে। আমরা দেখতে পাচ্ছি যে, কিছু মানুষ যারা সরকারের মধ্যে অনুপ্রবেশ ঘটিয়েছে; অনুপ্রবেশ ঘটিয়ে বাংলাদেশকে ভিন্ন দিকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে, ভিন্নখাতে তাকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করছে।

তিনি বলেন, বিএনপির ওপর সব সময় গুরু দায়িত্ব এসে পড়ে। সেই দায়িত্বটি হচ্ছে গণতন্ত্রকে প্রতিষ্ঠিত করবার দায়িত্ব, বাংলাদেশ আবার নতুন করে গড়ে তুলবার দায়িত্ব। সেই দায়িত্ব হচ্ছে শহিদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান যে স্বপ্ন দেখেছিলেন, আমাদের দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া যে স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করবার জন্য কাজ করা শুরু করেছিলেন- এখন তরুণ নেতা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান নতুন স্বপ্নের মধ্যে দিয়ে বাংলাদেশকে গড়ে তুলতে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। বাংলাদেশ এবং দেশের মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষাগুলোকে বাস্তবায়িত করবার জন্য আজকে বিএনপির প্রতিটি নেতাকর্মীকে অত্যন্ত সজাগ ও সচেতনভাবে তাদের কাজ করতে হবে এবং যেকোনো ষড়যন্ত্র ও চক্রান্তের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে।

নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বিএনপি মহাসচিব বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতা যেন আর কখনো কেউ কেড়ে নিতে না পারে, বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব কেউ যাতে বিনষ্ট করতে না পারে, বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে কেউ যাতে আর কখনো ফ্যাসিবাদ ও স্বৈরাচার দিয়ে দাবায়ে রাখতে না পারে, সেভাবে বিএনপির প্রতিটি কর্মীকে আজকে সেই ভূমিকা পালন করতে হবে। এ ৪৪তম শাহাদাতবার্ষিকীতে আজকে শোক নয়, আমরা শোককে সমস্ত শক্তি পরিণত করতে চাই।

মির্জা ফখরুল বলেন, আজকে যারা বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে; যারা বাংলাদেশকে ১৫ বছর ধরে একটা ফ্যাসিস্ট শাসনের মধ্যে রেখেছিল- বাংলাদেশে আবারো সেই জনগণের অধিকার থেকে বঞ্চিত করবার জন্য এবং উন্নয়নের পথে বাধা সৃষ্টি করবার জন্য তারা এখনো ষড়যন্ত্র করে চলেছে সীমান্তের ওপার থেকে। এ সময়েও কিন্তু শহিদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের নাম আমাদেরকে বারবার মনে রাখতে হবে।

জিয়াউর রহমানের শাহাদাতবার্ষিকীতে ৮ দিনের কর্মসূচি

সাবেক প্রেসিডেন্ট ও দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ৪৪তম শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষে আটদিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বিএনপি। এদিন যৌথসভা শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আগামী ২৬ মে থেকে ২ জুন পর্যন্ত আটদিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেন।

রিজভী বলেন, যেহেতু আগামী ৭ জুন কুরবানি ঈদ। সেজন্য আমাদের কর্মসূচি কিছুটা সংক্ষিপ্ত করা হয়েছে। কর্মসূচি হবে আট দিনব্যাপী। অর্থাৎ ২৫ তারিখ থেকে ২ জুন পর্যন্ত। আগামী ৩০ মে সকাল সাড়ে ১০টায় শেরে বাংলা নগরে জিয়াউর রহমানের কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানোর পাশাপাশি আলোচনা সভা, দুস্থদের মধ্যে চাল-ডালসহ বস্ত্র বিতরণসহ বিভিন্ন কর্মসূচি রয়েছে। শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষে দুইদিন নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়, গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়সহ সারা দেশে দলীয় কার্যালয়ে বিএনপির পতাকা অর্ধনমিত রেখে কালো পতাকা উত্তোলন করা হবে। বিএনপিসহ অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনগুলো জিয়াউর রহমানকে নিয়ে পোস্টার প্রকাশ করবে এবং বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশের ব্যবস্থা নেবে দলটি। কর্মসূচির মধ্যে আছে, ২৯ মে বিকাল ৩টায় রমনার ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউশন মিলনায়তনে আলোচনা সভা, আগামী ৩০ মে সকাল সাড়ে ১০টায় শেরে বাংলা নগরে জিয়াউর রহমানের কবরে শ্রদ্ধার্ঘ অর্পণ এবং মসজিদে মসজিদে গণদোয়া ইত্যাদি। এছাড়া ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপির উদ্যোগে বিভিন্ন থানা ও ওয়ার্ডে দুঃস্থদের মধ্যে চাল-ডালসহ ও বস্ত্র বিতরণ করা হবে। কেন্দ্রীয় কর্মসূচি ছাড়াও সারা দেশে জেলা ও উপজেলা-থানা-পৌর ইউনিটগুলোও জিয়াউর রহমানের স্মরণে আলোচনা সভা, দুঃস্থদের মধ্যে খাবার ও বস্ত্র বিতরণসহ বিভিন্ন কর্মসূচি করবে।

যৌথসভায় বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, আবদুস সালাম আজাদ, প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকুসহ দলের অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনগুলোর নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

-দৈনিক যুগান্তর

Translate »