সরকারি চুক্তি বাতিলের হুমকি ট্রাম্পের, পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় অভিশংসনের দাবি মাস্কের

টেসলা ও স্পেসএক্সসহ ইলন মাস্কের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের চলমান সব চুক্তি বাতিলের হুমকি দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বৃহস্পতিবার (৫ জুন) ওভাল অফিসে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ট্রাম্প এই হুঁশিয়ারি দেন। তার এই বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় ইলন মাস্ক পাল্টা আক্রমণ করে বলেন, ট্রাম্পের বিরুদ্ধে এখনই অভিশংসন প্রক্রিয়া শুরু হওয়া উচিত। খবর রয়টার্সের।
বাজেট বিলকে কেন্দ্র করে শুরু হওয়া মতবিরোধ ক্রমেই তীব্র আকার নিচ্ছে। এক সময়ের ঘনিষ্ঠ দুই ব্যক্তিত্বের সম্পর্ক এখন প্রকাশ্য দ্বন্দ্বে পরিণত হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একে অপরের বিরুদ্ধে আক্রমণাত্মক মন্তব্যে জড়িয়ে পড়েছেন ট্রাম্প ও মাস্ক।
ট্রাম্প বলেন, ‘সরকারি বাজেট সাশ্রয়ের সবচেয়ে সহজ উপায় হচ্ছে ইলন মাস্কের সরকারি ভর্তুকি ও চুক্তিগুলো বাতিল করা। এতে শত শত কোটি ডলার সাশ্রয় করা সম্ভব।’ এ মন্তব্য তিনি নিজের মালিকানাধীন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘ট্রুথ সোশ্যাল’-এ পোস্ট করেন।
এরই জবাবে মাস্ক এক্সে (সাবেক টুইটার) লিখেছেন, ‘ট্রাম্পের বিরুদ্ধে এখনই অভিশংসনের প্রক্রিয়া শুরু করা উচিত।’ যদিও তিনি স্বীকার করেন, কংগ্রেসের উভয় কক্ষে রিপাবলিকানদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকায় তা বাস্তবে কার্যকর হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম।
ট্রাম্প ও মাস্কের মধ্যকার এই বিবাদ শুরু হয় বাজেট বিল নিয়ে। মাস্ক বিলটিকে ‘জঘন্য’ বলে মন্তব্য করেন, যা ট্রাম্পকে ক্ষুব্ধ করে তোলে। এরপর থেকেই দুই জনের মধ্যে একের পর এক পাল্টাপাল্টি বক্তব্য সামনে আসতে থাকে।
এর আগে ওভাল অফিসে বসে ট্রাম্প বলেন, ‘ইলনের সঙ্গে আমার খুব ভালো সম্পর্ক ছিল। জানি না, সেটা আর থাকবে কিনা।’ তিনি মাস্কের ‘অপ্রত্যাশিত অবস্থান পরিবর্তনে’ হতাশ বলেও মন্তব্য করেন।
ট্রাম্পের এই বক্তব্য সরাসরি সম্প্রচার হওয়ার সময়ই মাস্ক এক্সে লাইভ টুইট করে পাল্টা প্রতিক্রিয়া জানান। তিনি দাবি করেন, ২০২৪ সালের নির্বাচনে তার সহায়তা ছাড়া ট্রাম্প জয়ী হতে পারতেন না। পাশাপাশি, ট্রাম্পকে ‘অকৃতজ্ঞ’ বলেও আখ্যা দেন তিনি।
ট্রাম্পের এসব মন্তব্য ও হুমকির পরপরই টেসলার শেয়ারের দাম উল্লেখযোগ্য হারে কমে যায়, যা বিনিয়োগকারীদের মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি করে।
বিশ্লেষকদের মতে, যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম বড় উদ্যোক্তা ও ক্ষমতাধর প্রেসিডেন্টের মধ্যকার এই দ্বন্দ্ব শুধু রাজনৈতিক অঙ্গনেই নয়, প্রযুক্তি ও অর্থনীতিতেও বড় প্রভাব ফেলতে পারে।
-রয়টার্স