কিশোরগঞ্জে ঘুমন্ত ভাই, ভাবি ও ভাতিজাকে একাই হত্যার কথা স্বীকার করেছে দ্বীন ইসলাম: পুলিশ
কটিয়াদী মডেল থানার ওসি এম এ জলিল এসব তথ্য জানিয়েছে, পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে দ্বীন ইসলাম তার ভাই, ভাবি ও ভাতিজা হত্যকাণ্ডের দায় স্বীকার করেছেন। মেরে শাবল দিয়ে মেরে ঘরের পেছনে গর্ত করেন তিনি। পরে লাশ টেনে নিয়ে সেই গর্তে রাখেন তিনি। প্রথমে ভাইয়ের লাশ, তারপর ভাবির লাশ ও পরে ভাতিজার লাশ রেখে দ্বীন ইসলাম মাটিচাপা দেন।
ওসি জানান, দ্বীন ইসলাম জানান, বুধবার (২৮ অক্টোবর) রাত দেড়টা থেকে ২টার দিকে এই ঘটনা ঘটান। জমি সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে বিরোধের জের ধরে ভাই, ভাবি ও ভাতিজাকে হত্যা করেছেন।
এ ঘটনায় আটক অপর ৩ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
এর আগে বৃহস্পতিবার (২৯ অক্টোবর) সন্ধ্যার পর কটিয়াদী উপজেলার বনগ্রাম ইউনিয়নের জামষাইট গ্রামে মাটিচাপা দেয়া ৩ জনের লাশ উদ্ধার তৎপরতা শুরু করে পুলিশ। রাত সাড়ে ১০টার দিকে মাটি খুঁড়ে আসাদ মিয়া, তার স্ত্রী পারভীন ও তাদের ছেলে লিয়ন এর লাশ উদ্ধার করা হয়। নিহত আসাদ মিয়া জামষাইট এলাকার মৃত মীর হোসেনের ছেলে।
স্থানীয়রা জানান, আসাদ মিয়ার সাথে তার ছোটভাই দ্বীন ইসলামের জমি সংক্রান্ত বিরোধ চলছিল। বৃহস্পতিবার (২৯ অক্টোবর) সকালে আসাদ মিয়ার মেজো ছেলে মোফাজ্জল হোসেন নানার বাড়ি থেকে বাড়ি ফিরে বাবা, মা ও ছোট ভাইকে না পেয়ে তাদের খুঁজতে থাকে। পরে ঘরের ভেতর রক্ত দেখে সন্দেহ হয় তার। সারাদিন খোঁজাখুজি করে তাদের কোন সন্ধান পাননি ছেলে মোফাজ্জল।
ঘটনাটি এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে সন্ধ্যায় স্থানীয় মানুষের ঘরের পিছনে মাটি খোঁড়া দেখে অনুসন্ধান করে। কোদাল দিয়ে মাটি উল্টাতেই বেরিয়ে আসে শিশু বাচ্চাটির হাত। তৎক্ষণাৎ কটিয়াদী থানার পুলিশকে সংবাদ দেওয়া হয়। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে সুরতহাল শেষে ময়না তদন্তের জন্যমর্গে পাঠায় কিশোরগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে।
এদিকে ঘটনার পর থেকে মৃত্যুর ছোট ভাই দ্বীন ইসলামকে বাড়িতে পাওয়া যায়নি। পরে সন্ধ্যায় পার্শ্ববর্তী মুমুরদিয়া বাজারের একটি চা দোকান থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এছাড়া আরও ৩ জনকে আটক করা হয়।
কিশোরগঞ্জের এসপি মো. মাশরুকুর রহমান খালেদ বিপিএম (বার), হোসেনপুর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. সোনাহর আলী ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
কটিয়াদী মডেল থানার ওসি জলিল জানান, নিহত ৩ জনেরই মাথায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। এছাড়া এ ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।