জঙ্গি ছিনিয়ে নেওয়ার হুমকি, দেশের কারাগারগুলোতে সর্বোচ্চ সতর্কতা
সম্প্রতি দেশের কারাগারগুলোতে ফোন করে ও চিঠি পাঠিয়ে দুষ্কৃতকারীরা জঙ্গি ছিনিয়ে নেওয়ার হুমকি দিয়েছে। এ সংবাদ পাওয়ার পরই কারা মহাপরিদর্শক (আইজি প্রিজন্স) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ কে এম মোস্তফা কামাল পাশা দেশের সব কারাগারে সর্বোচ্চ সতর্কাবস্থায় থাকার নির্দেশ দিয়েছেন। পাশাপাশি কারাগারে আইএস, বন্দি ‘জঙ্গি, শীর্ষ সন্ত্রাসী, বিডিআর ও বিভিন্ন সংবেদনশীল মামলায় আটক বন্দিদের চলাচল ও গতিবিধি কঠোরভাবে নজরদারি’র নির্দেশও দিয়েছেন।
রবিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) দেশের কারাগারগুলোতে এ বিষয়ে একটি চিঠি দেন আইজি প্রিজন্স। চিঠিতে সম্ভাব্য ঝুঁকি এড়াতে ১৮ দফা নির্দেশনাও তিনি দিয়েছেন। কারা অধিদফতরের উর্ধ্বতন একজন কর্মকর্তা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
কারাগারগুলোতে পাঠানো চিঠিতে আইজি প্রিজন্স উল্লেখ করেন, কিছু দুষ্কৃতকারী ব্যক্তি কারাগারে জঙ্গিদের ছিনিয়ে নেওয়ার হুমকি দিয়ে চিঠি পাঠিয়েছে, টেলিফোনও করেছে। ‘কারাগার হলো স্পর্শকাতর প্রতিষ্ঠান। দুষ্কৃতকারীদের অপতত্পরতা নস্যাত্ করে বন্দির পলায়নসহ যে কোনো দুর্ঘটনায় কঠোর হওয়া কারাগারের সর্বস্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নির্দেশ দিয়েছেন। সম্প্রতি কিছু কারাগারের নিরাপত্তা ব্যবস্থায় শৈথিল্যের প্রমাণ মিলেছে। দেশের সব কারাগার কর্তৃক যে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা প্রতিরোধে পূর্ব থেকে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করা আবশ্যক। নির্দেশনা সবাইকে মেনে চলার নির্দেশনাও দেন তিনি।
আইজি প্রিজন্সের দেয়া নির্দেশনারগুলোর মধ্যে রয়েছে প্রতিটি কারাগারে একজন ডেপুটি জেলার, একজন প্রধান কারারক্ষী ও ৫জন কারারক্ষীর সমন্বয়ে একটি স্ট্রাইকিং ফোর্স গঠন করে প্রস্তুত থাকা সম্ভাব্য আক্রমণ প্রতিরোধে। কারাগারের বাইরের গেটে দায়িত্বপালনকারীদের বুলেট প্রুফ জ্যাকেট, হেলমেট নিশ্চিত করে ডিউটিতে সশস্ত্র সেন্ট্রি নিয়োগ দেয়া, আগতদের মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে তল্লাশি করা, অস্ত্র ও অস্ত্রাগারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।
এছাড়া চিঠিতে তিনি বলেছেন, কারাগারের অস্ত্রাগার থেকে প্রয়োজনী মুহূর্তে যেন দ্রুত অস্ত্র ও গোলাবারুদ সংগ্রহ করা যায় সেজন্য দরকারী মহড়ার আয়োজন করতে হবে। কারাগারের চারপাশের সীমানাপ্রাচীর সুরক্ষিত রেখে এবং প্রস্তুত রাখতে হবে অ্যালার্ম সিস্টেম পরীক্ষা করে। কারাগারে আটক আইএস, জঙ্গি, শীর্ষ সন্ত্রাসী, বিডিআর ও বিভিন্ন সংবেদনশীল মামলায় আটক বন্দিদের চলাচল ও গতিবিধি কঠোরভাবে নজরদারি করতে হবে। যেসব কারাগারে এ ধরনের আইএস, জঙ্গি বন্দি রয়েছে সেসব এলাকায় পুলিশ প্রশাসনকে বিষয়টি জানিয়ে তাদের সাথে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রক্ষা করতে হবে। চিঠিতে কঠোরভাবে এসব নির্দেশনা মানতে বলা হয়।
প্রসঙ্গত, ২০১৪ সালে ময়মনসিংহের ত্রিশালে দিনে-দুপুরে প্রিজন ভ্যানে বোমা, গুলি চালিয়ে জঙ্গি মামলার ৩ আসামিকে ছিনিয়ে নেওয়া হয়। তারা হচ্ছেন, কারাগারের পার্ট-১ এর সালাউদ্দিন ওরফে সজীব ওরফে তৌহিদ, গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগারের (হাই সিকিউরিটি) আসামি রাকিব হাসান ওরফে হাফেজ মাহমুদ ওরফে রাসেল এবং কারাগারের পার্ট-২ এর মিজান ওরফে বোমা মিজান ওরফে জাহিদুল হাসান সুমন।