Type to search

জাতীয়

প্রকল্প যথাসময়ে শেষ না করায় বিরক্ত প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা-abcb news

উন্নয়ন প্রকল্পের মেয়াদ ও টাকা বাড়ানোর ধারা বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, যথাসময়ে প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে হবে। প্রকল্প পরিচালকদের (পিডি) ডাকুন। প্রকল্পের বাস্তবায়ন কেন দেরি হচ্ছে তার কারণ অনুসন্ধান করুন।

মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে এ নির্দেশ দেন তিনি। বৈঠক শেষে ব্রিফিংয়ে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের সদস্য (সিনিয়র সচিব) ড. শামসুল আলম। গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে একনেক সভায় সভাপতিত্ব করেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, প্রকল্প আবার সংশোধন, আবার টাকা বাড়ানো- এ ধরনের ধারা বন্ধ করুন। প্রকল্পে যে সময় নেবেন, সে সময়ই শেষ হওয়া উচিত। তিনি বলেন, সময় আরও বাড়িয়ে নিয়ে আসেন, ব্যয়ও আরও বাড়িয়ে নিয়ে আসেন, এটা আর হতে পারে না।

এদিন একনেক সভায় ৩ হাজার ৯০৩ কোটি ৩১ লাখ টাকা ব্যয়ে চারটি প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে সরকারি অর্থায়ন ৩ হাজার ৫২৪ কোটি ৫১ লাখ এবং সংস্থার নিজস্ব অর্থায়ন ৩৭৯ কোটি ৫১ লাখ টাকা।

সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের ‘চরখালী-তুষখালী-মঠবাড়িয়া-পাথরঘাটা সড়ক উন্নয়ন ও প্রশস্তকরণ ( জেড-৮৭০১)’ প্রকল্পের প্রথম সংশোধন আনা হয়েছে। সংশোধনীতে ৪৪ কোটি ৫৭ লাখ টাকা বাড়ানো হয়েছে। প্রকল্পটির মূল খরচ ১০৪ কোটি ৭৭ লাখ টাকা বাড়িয়ে করা হয়েছে ১৪৯ কোটি ৩৪ লাখ টাকা। প্রকল্পের মেয়াদও বাড়ানো হয়েছে। ২০১৭ সালের এপ্রিলে শুরু হওয়া প্রকল্পটি ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে শেষ হওয়ার কথা ছিল। বর্তমানে প্রকল্পটির মেয়াদ বাড়িয়ে ২০২১ সালের জুন পর্যন্ত করা হয়েছে। প্রকল্পটির সময়-ব্যয় বৃদ্ধি নিয়ে বিরক্তি প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী।

প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য তুলে ধরে শামসুল আলম বলেন, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন ২০১৭ সালে এক বছরের জন্য প্রকল্প নিলেন, এই প্রকল্প এতদিন লাগা উচিত হয়নি। এটা তো পুরনো সড়ক ছিল। এটা তো আপনারা তুলে ফেলতে পারতেন। এত দীর্ঘ সময় কেন লাগল? এখন ২০২১ সাল পর্যন্ত নিয়েছেন, এটাই শেষ। এরপর আর বাড়াতে পারব না। যখন যে প্রকল্প হবে, তা যথাসময়ে শেষ করবেন। প্রধানমন্ত্রী যথেষ্ট জোরের সঙ্গে এসব কথা বলেছেন।

এ সময় প্রধানমন্ত্রী দক্ষিণাঞ্চলের সব সড়কের মাস্টারপ্ল্যান করার জন্যও নির্দেশনা দিয়েছেন। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য তুলে ধরে পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য বলেন, পদ্মা সেতু হয়ে গেলে উন্নয়ন কার্যক্রমে একটা নতুন গতিশীলতা তৈরি হবে। যে কারণে দক্ষিণাঞ্চলের পুরো এলাকার মাস্টারপ্ল্যান করতে নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। কী কী রাস্তাঘাট আছে। সেগুলোতে অনেক ভারী যানবাহন যেতে পারে সে ব্যবস্থা করে এগুলোকে পুনঃ আকৃতি করুন। মাস্টারপ্ল্যান অনুযায়ী সেটা করা উচিত।

‘কৃষি তথ্য সার্ভিস আধুনিকায়ন ও ডিজিটাল কৃষি তথ্য ও যোগাযোগ শক্তিশালীকরণ’ প্রকল্পটি ২০১৮ জানুয়ারি থেকে চলমান। প্রকল্পের মেয়াদ বেড়ে ২০২২ সালের জুন পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়। মূল প্রকল্পের ব্যয় ছিল ৬৮ কোটি ৭১ লাখ টাকা। বর্তমানে প্রকল্পের ব্যয় বেড়ে ১০৯ কোটি ৯১ লাখ টাকা করা হয়েছে।

প্রকল্প বাস্তবায়নের সর্বশেষ অগ্রগতি জানতে প্রকল্প পরিচালককে খোঁজ করেন প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রী সরাসরি জানতে চেয়েছেন প্রকল্প বাস্তবায়ন দেরি হওয়ার কারণ কী? তিনি জানতে চেয়েছেন, প্রকল্প পরিচালক কে? প্রকল্প পরিচালক উপস্থিত ছিলেন না। তবে সচিব উপস্থিত ছিলেন।

প্রধানমন্ত্রীর অনুশাসন তুলে ধরে শামসুল আলম বলেন, প্রকল্প বাস্তবায়নে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী। সব প্রকল্পে দেরি হয় কেন জানতে চেয়েছেন? তিনি বলেছেন, এটা ছোট টাকার প্রকল্প। এটা তো এতদিন লাগার কথা নয়। যখন প্রকল্পটি শেষ হওয়ার কথা তখন আরও দুবছর মেয়াদ বাড়াচ্ছেন কেন? এই সময় বাড়ানোর জন্য ৬৮ কোটি টাকাকে এখন ১০৯ কোটি বানালেন। এটা গিয়ে পর্যালোচনা করুন। প্রকল্প পরিচালকদের ডাকুন। সব প্রকল্প যেন যথাসময়ে শেষ হয় সে ব্যবস্থা নিন।

Translate »