প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে দক্ষিণ এশিয়া সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে আছে: প্রধানমন্ত্রী
করোনাভাইরাস বা কোভিড-১৯ মহামারী সব দেশের মধ্যে সহযোগিতা বৃদ্ধি এবং একসঙ্গে কাজ করার মতো পরিস্থিতি তৈরি করেছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বর্তমান এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের সঙ্কট মোকাবেলায় একে অপরকে ছেড়ে যাওয়া আমাদের উচিত নয়।
মঙ্গলবার (৮ সেপ্টেম্বর) বিকালে বাংলাদেশে বৈশ্বিক অভিযোজন কেন্দ্রের (গ্লোবাল সেন্টার অন অ্যাডাপটেশন-জিসিএ) আঞ্চলিক কার্যালয়ের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, এ অঞ্চলের জনগন একটি প্রাকৃতিক দুর্যোগ কাটিয়ে উঠতে না উঠতে আরেকটি এসে আঘাত হানে, ফলে যে কোনো অগ্রগতি উল্টে যায়। এই চক্র ভাঙতে দক্ষিণ এশিয়াকে দুর্যোগে টিকে থাকার আরও বাড়াতে হবে সক্ষমতা।
জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর ‘সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে’ থাকার কথা তুলে ধরে প্রাকৃতিক দুর্যোগের চক্র থেকে এ অঞ্চলের জনগণকে বের করে আনতে অভিযোজনের আঞ্চলিক সক্ষমতা বাড়ানোর ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
ভার্চুয়াল এ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বন্যা, ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস, খরা, ভূমিধস, হিমবাহে ধসের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে দক্ষিণ এশিয়া সবচেয় ঝুঁকিতে আছে। এমনকি তাপমাত্রা ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস (প্রাক শিল্পায়ন যুগের তুলনায়) বাড়লেও বাংলাদেশসহ এ এলাকায় মারাত্মক প্রভাব পড়বে। দুর্যোগে নারী, শিশু, বয়স্ক এবং বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন মানুষের ঝুঁকির বিষয়টিও ভুলে গেলে চলবে না আমাদের।
গত এক দশকে দক্ষিণ এশিয়ার অর্ধেক জনগোষ্ঠী, অর্থাৎ প্রায় ৭০ কোটি মানুষ জলবায়ু পরিবর্তনজনিত প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিসাধিত হয়েছে বলে জানান শেখ হাসিনা।
প্যারিস চুক্তি বাস্তবায়ন, গ্রিন হাউস গ্যাসের কারণে বাড়তে থাকা তাপমাত্রা এবং অন্যান্য পরিবেশগত ক্ষতি রোধে বাংলাদেশের প্রতিশ্রুতির বিষয়টিও শেখ হাসিনা স্মরণ করিয়ে দেন।
“আমাদের সরকার ২০০৯ সালের বাংলাদেশ ক্লাইমেট চেইঞ্জ স্ট্র্যাটেজি অ্যান্ড অ্যাকশন প্ল্যানের আওতায় জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি কমাতে বিভিন্ন পদক্ষেপ এবং অভিযোজন কর্মসূচি নিয়েছে। ২০০৯ সালে আমরা জলবায়ু ট্রাস্ট তহবিল প্রতিষ্ঠা করেছি এবং কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নে নিজস্ব তহবিল থেকে এ পর্যন্ত ৪৩ কোটি ডলার বরাদ্দ দিয়েছি।
জিসিএর বাংলাদেশ কার্যালয় দক্ষিণ এশিয়ার অভিযোজন এবং জলবায়ুসহিষ্ণুতা অর্জনে সহায়তা করবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গ্লোবাল সেন্টার অন অ্যাডাপটেশন-জিসিএর আঞ্চলিক কার্যালয়ের উদ্বোধন করেন।
তিনি বলেন, আমি আশা করি, এই কার্যালয়ের মাধ্যমে অভিযোজন বিষয়ে বাংলাদেশের সাথে অন্যান্য দেশের অভিজ্ঞতা এবং কর্মসূচি বিনিময় হবে। এই কার্যালয় এ অঞ্চলের অভিযোজন বিষয়ক সমস্যা সমাধান এবং সেন্টার অব এক্সিলেন্স হিসেবে কাজ করবে।”
কোভিড-১৯ এর মধ্যে বাংলাদেশে কার্যালয় চালু করতে সহযোগিতা করায় তিনি জিসিএর সভাপতি বান কি মুনকে ধন্যবাদ জানান।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জিসিএর বাংলাদেশ কার্যালয়ের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন ঘোষণা করেন।
