সংবাদপত্র শিল্প এখন মুমূর্ষু ও খাদের কিনারে: মির্জা ফখরুল
করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) কালীন পরিস্থিতিতে রুগ্ন দেশের সংবাদপত্র শিল্প আরও ভয়াবহভাবে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে। সংবাদপত্র শিল্প এখন মুমূর্ষু ও খাদের কিনারে। সংবাদপত্র শিল্পের কর্মীরা এখন চরম দুর্দিন অতিক্রম করছে। এই শিল্পকে টিকিয়ে রাখার জন্য সরকারের উদ্যোগ গ্রহণ অত্যন্ত জরুরি বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
রবিবার (২৩ আগস্ট) এক বিবৃতিতে তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে করোনাভাইরাস ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ায় সংবাদপত্রের বিজ্ঞাপন, বিক্রির সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে কমে গেছে। রাজধানীসহ সারাদেশে অসংখ্যক সংবাদপত্র প্রকাশ বন্ধ হয়ে গেছে। বহু পত্রিকা তাদের কর্মীদের বেতন-ভাতা দিতে পারছে না এবং প্রতিনিয়তিই উল্লেখযোগ্য সংখ্যক সংবাদকর্মী চাকরি হারাচ্ছেন। নিজেদের টিকিয়ে রাখতে অত্যন্ত জোরেসোরে ব্যয় সংকোচনের নীতি গ্রহণ করেছে পত্রিকাগুলো।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, অনেক সংবাদ কর্মীরা চাকরি হারিয়ে কিংবা ক্রমাগত আয় কমে যাওয়ায় পত্রিকার নিরুপায় কর্মীরা কঠিন পরিস্থিতিতে জীবনযাপন করছেন। এই মহা সংকটকালে বিষন্ন পরিস্থিতিতে বিকল্প আয়েরও কোন সুযোগ নেই। ইতোমধ্যে দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে করোনায় পজিটিভ হয়ে বেশ কয়েকজন সাংবাদিক মৃত্যুবরণ করেছেন। এখনও অনেকেই করোনায় শনাক্ত হয়ে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন। সংবাদপত্র শিল্পের সংকটের কারণে করোনাভাইরাস আক্রান্ত সংবাদকর্মীরা নিজেদের চিকিৎসা ব্যয়ও বহন করা কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে।
সংবাদপত্র শিল্পকে রক্ষায় নিউজ পেপারস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ- নোয়াবের দাবির প্রতি বিএনপির সংহতি প্রকাশ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘নোয়াব’ এর নেতৃবৃন্দ তাদের দাবি নিয়ে আলোচনা করার সময় মন্ত্রীদের পক্ষ থেকে আশ্বাস করা হলেও কার্যত: ইতিবাচক কিছুই ঘটেনি এখনও পর্যন্ত। পরিকল্পিতভাবে এই খাততে ধ্বংস করতে চায় সরকার। করোনাভাইরাসের এই সংকটকালে অন্যান্য দু’একটি শিল্পকে কিছু প্রণোদনা দেওয়া হলেও সরকার সংবাদপত্র শিল্পের প্রতি একেবারেই ভ্রুক্ষেপহীন। বর্তমান সরকার সংবাদপত্রের প্রতি সবসময় বৈরী মনোভাব পোষণ করে। হয়তো সেজন্যই সংবাদপত্র শিল্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট পক্ষদের দাবি শুনেও না শোনার ভান করছে সরকার।
সংবাদপত্র শিল্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট শুল্ক ও ভ্যাট ‘নোয়াব’ এর দাবি অনুসারে নির্ধারণ করার জন্য আহ্বান জনিয়ে তিনি বলেন, প্রণোদনা প্রদান ও সহজ শর্তে ঋণ এবং সরকারের কাছে পাওনা বিপুল পরিমাণ বিজ্ঞাপনের বিল দ্রুত পরিশোধের মাধ্যমে এই মুহূর্তে সংবাদপত্র শিল্পকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্ত থেকে ফিরিয়ে আনা সম্ভব, ‘নোয়াব’ ইতোমধ্যেই যেটির আবেদন জানিয়েছে। কিন্তু কোন সাড়া নেই সরকারের পক্ষ থেকে।
তিনি বলেন, মানব সভ্যতার অগ্রগতির আলোকদিশারী হলো সংবাদপত্র। বহুদলীয় গণতন্ত্রের সঙ্গে সংবাদপত্র শিল্পের হৃদ্যতার সম্পর্ক থাকে। সংবাদপত্রেই মানবগোষ্ঠীর বহু মত ও চিন্তা প্রতিফলিত হয়।