কে এই আয়াতুল্লাহ খামেনি, যাকে হত্যা করতে চান ট্রাম্প

ইরান ও ইসরাইলের মধ্যে সাম্প্রতিক উত্তেজনা শুরুর পর থেকেই যে নামটি সবচেয়ে বেশি আলোচনায় রয়েছে তা হচ্ছে—আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু দুজনেই ইরানের এই সর্বোচ্চ নেতাকে সরাসরি লক্ষ্যবস্তু করার ইঙ্গিত দিয়েছেন।
আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি কে?
আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি হলেন মধ্যপ্রাচ্যের অন্যতম ক্ষমতাধর ব্যক্তি। প্রায় চার দশক ধরে তিনি ইরানকে শাসন করে আসছেন। এ সময়ে তিনি যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইলের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন, ইরানের বিতর্কিত পারমাণবিক কর্মসূচি এগিয়ে নিয়েছেন, অভ্যন্তরীণ বিরোধ ও আন্দোলন দমন করেছেন।
সর্বোচ্চ নেতা হিসেবে খামেনি ইরানের সরকার, বিচার বিভাগ, সামরিক বাহিনী, ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনী এবং কুদস ফোর্স–এর ওপর পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ রাখেন।
খামেনি ১৯৩৯ সালে ইরানের পবিত্র নগরী মাশহাদে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ছিলেন আয়াতুল্লাহ রুহুল্লাহ খোমেনির শিষ্য, যিনি ১৯৭৯ সালের ইরান বিপ্লবের মাধ্যমে দেশটির প্রো-ওয়েস্ট রাজতন্ত্রকে উচ্ছেদ করেন ও ইসলামি প্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেন।
১৯৮১ সালে খামেনি একটি হামলার শিকার হন, যাতে তার ডান হাত স্থায়ীভাবে বিকল হয়ে যায়। রুহুল্লাহ খোমেনির মৃত্যুর পর ১৯৮৯ সালে, তিনি ইরানের সর্বোচ্চ নেতা হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন।
সর্বোচ্চ নেতা হওয়ার পর থেকে খামেনি ইরানের সীমান্ত ছাড়িয়ে আঞ্চলিক প্রভাব বিস্তারে মনোযোগ দেন। অ্যাক্সিস অব রেজিস্ট্যান্স নামে পরিচিত একাধিক মিত্র গোষ্ঠী গড়ে তোলেন যা লেবানন থেকে ইয়েমেন পর্যন্ত বিস্তৃত।
এই দীর্ঘ সময় ইরান সরাসরি যুদ্ধে না জড়ালেও, সব কিছু বদলে যায় যখন ৭ অক্টোবর ২০২৩-এ হামাস ইসরাইলের হামলা চালায়।
এর পর গাজায় ইসরাইলের আগ্রাসন, লেবাননের হিজবুল্লাহর ওপর আক্রমণ ও এবং ইরানের পারমাণবিক কেন্দ্র ও শীর্ষ সামরিক নেতাদের ওপর ইসরাইলের বিমান হামলা ইরানের অজেয় ভাবমূর্তি ভেঙে দেয়।
ডোনাল্ড ট্রাম্প খামেনিকে ‘সহজ লক্ষ্যবস্তু’ বলে অভিহিত করেছেন। এই মন্তব্য কেবল কূটনৈতিক উত্তেজনা নয়, বরং একটি সম্ভাব্য সামরিক পদক্ষেপের সংকেতও বহন করে।
তথ্যসূত্র: সিএনএন