Type to search

Lead Story সম্পাদকীয় ও মতামত

টিপ বিতর্ক সমাধান!

মাসুদুর রহমান:
মুসলিম নারীরা টিপ পরবে না! কারণ ইসলাম ধর্মে হারাম! কেউ যদি পরে তাহলে গুনাহ হবে। আর গুনাহ করাটাও প্রতিটি মানুষের ব্যক্তি চরিত্রার্থ স্বভাবের দোষ! কতো মানুষ ঘুষ-সুদ খায় কিন্তু আবার মাথায় টুপি দেয়! তাতে রাষ্ট্র কি আইন করে সব বন্ধ করতে পারছে। দুর্নীতি দমন কমিশন কি সমাজটাকে বদলে দিতে পারছে! অর্থাৎ পৃথিবীতে যুদ্ধ এবং শান্তি দুই মেরুতেই থাকে! যাহোক, কোনো মুসলিম মহিলা যদি টিপ পরেন তাহলে তিনি গুনাহ করলেন! এর শাস্তি তিনি পরকালে পাবেন! কিন্তু টিপ পরা নিয়ে কোনো কেরামত মওলা তাকে কটুবাক্য করতে পারবেন না! পরকালের হিসাব কোষে দিতে পারেন না! কথায় আছে, অন্যের পরিবার নিয়ে তামাশা বা উকালতি করা যাবে না! কারণ তাঁর এ-ই টিপ টপস জিন্সের প্যান্ট বা শাড়ী পরা নিয়ে স্বামী ও নিজ বাবা-মা, বা শশুর-শাশুড়ী রয়েছে! একমাত্র স্বামী বলতে পারেন তোমাকে শাড়ী এবং জিন্স শার্ট পরিহিত ভালো লাগে না! তুমি থ্রি-পিচ পরো! অথবা শাশুরী বলবে বউমা তোমাকে শাড়ীতে চমৎকার লাগছিল! যাহোক, অবশেষে বউটার যা ভালো লাগে যাতে মানায় তাতে সে তাই পরবে! এর জন্য কোনো রাষ্ট্র বা সংগঠন বা মাতম্বর, মওলানা সাহেব, পুলিশ পণ্ডিত ডক্টর আদিত্য কেউ নির্ধারণ করে দিতে পারেন না! শুধু এই টিপ পরা কেন ইসলামের অন্যান্য বিষয় আছে যা অনেক নারী ও পুরুষ মানেন না! আবার চোখে কাজল দেয়া হারাম নয়! অনেক আলেমদের দেখেছি চোখে কাজল বা সুরমা দেয়! বোরকা পরিহিত অনেক নারী নয়ন ভরে কাজল দেয়! এটা ইসলামে হারাম নয়! আমার স্ত্রী চোখে কাজল দেন কিন্তু টিপ পরেন না! আমি কিন্তু শুরুতে অনেক টিপ কিনে দিয়েছি! আর সাজগোজ বিষয়ে নানান টিপস দিয়েছি! সে পরে না! সে সাজে না! সে বলে এতো সাজগোজ ভালা না! ন্যাচারাল সৌন্দর্যই আসল!সে বলে টিপ পরা ভালা না! আমি বলেছি এটা তোমার স্বাধীনতা! শৈশবে দেখেছি বড় বোন, ফুপিরা সাজগোজে টিপস দিতো একে অপরকে! কেউ টিপ পরতো, কেউ কাজল, পায়ে আলতা, কেউ শার্ট, কেউ শাড়ি, কেউ প্যান্ট পরতো! পরবর্তীতে দেখেছি এরাই সমাজ ও ধর্ম এবং পরিবারের রুচিবোধ অনুযায়ী পোশাক-সাজগোজ নির্বাচন করেছে! আরেকটি উপাদান যেমন, চোখে কাজল দেয়া হারাম নয়! বরং উপকার এবং ইসলাম ধর্মে সুন্নত! কিন্ত কোনো হিন্দু নারীকে চোখে কাজল দিতে দেখিনি! কারণ হয়তো তাঁর ধর্মে কাজলে নিষেধ আছে! যাইহোক, খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, চিকিৎসা, হালাল ও হারাম বিষয়ে ধর্ম শিক্ষাটা তাকে পরিবার দিবে বা ধর্মীয় গ্রন্থ দিবে। মজার বিষয়, বইমেলায় কিন্তু ধর্মীয় বই কম বিক্রি হয় না! অথবা তাঁর শৈশবের ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান গীর্জা, প্যাগোডা, মন্দির, মসজিদ মাদ্রাসা থেকে দিবে! কিন্তু কোনো রাষ্ট্র বা ব্যক্তি বা সংগঠন বা প্রতিষ্ঠান কোনো মানুষকে তাঁর মৌলিক অধিকার বিষয়ে বিধিনিষেধ দিতে পারে না! কারণ কে কি খাবে, কি পরবে, কি কথা বলবে, কি দেখবে এগুলো ব্যক্তি পচ্ছন্দের অবাধ স্বাধীনতা!
যাঁরা অতি সাম্প্রতিক পণ্ডিত মশাইরা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির কথা বলছেন তাঁরা বুঝতে পারেন না ধর্ম এবং মানবাধিকার চর্চা কি জিনিস! খায় না মাথায় দেয়! ওরা ওকালতি করে দেশটাকে গিলে খাচ্ছে অতিরিক্ত অসাম্প্র দায়িক চেতনার কথা বলে দাঙ্গা হাঙ্গামা উসকে দিচ্ছেন ! সাধারণ মানুষের মাঝে মনে ক্ষোভের উদ্রেক তৈরি করছেন! উল্টোপাল্টা কথা বলে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির মিছিলে গুলি চালিয়ে দিচ্ছেন! ওঁরা যদি বলতো, হিন্দু ধর্মের নারীরা টিপ টপস সবই পরতে পারবেন! মুসলিম নারী-রা টিপ পরতে পারবেন না! যদিও পরেন এটা তাঁর স্বাধীনতা! বলতে পারেন গুনাহ করার স্বাধীনতা! তাহলে কোনো গোল ও গোলকধাঁধা বেঁধে যেতো না!
আমাদের প্রতিটি মানুষের নিজ নিজ ধর্ম সঠিকভাবে পালন এবং অন্যান্য ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়া উচিত! কারণ পৃথিবীতে সকল ধর্মের আস্থায় আশ্রয়ে বিশ্বাসীদের বসবাস রয়েছে!
হিন্দু মহিলা-রা টিপ পরবে!
হিন্দু ধর্মে নিষেধ নেই!
এটা তাঁর ব্যক্তি এবং ধর্মের স্বাধীনতা! তাঁর ধর্ম তাঁকে টিপ পরার অধিকার প্রতিষ্ঠা করেছে। টিপ পরা মহিলার নারীত্ব সৌন্দর্য নিয়ে কটুক্তি করা যাবে না! তেমনি হিজাব পরিধান ইসলাম ধর্মে নিষিদ্ধ নয় বরং সুন্নত! এজন্য রাষ্ট্র বা কোনো ব্যক্তি তাকে হিজাব পরা নিয়ে কোনো কটুবাক্য করতে পারবেন না! অনেক মুসলিম নারী-রা কেউ কেউ হিজাব-বোরকা পরিধান করে বা করে না! আশা করি সকলে বুঝতে পারলেন!
Translate »