লন্ডনে কোরআন পোড়ানো ব্যক্তি আদালতে দোষী সাব্যস্ত

যুক্তরাজ্যের রাজধানী লন্ডনে তুরস্কের কনস্যুলেটের সামনে কোরআন পোড়ানোর ঘটনায় এক ব্যক্তিকে আদালত দোষী সাব্যস্ত করেছেন স্থানীয় একটি আদালত। এ ঘটনায় হ্যামিট কোসকুন নামের ওই ব্যক্তিকে ২৪০ ইউরো জরিমানা করেছে, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৩৪ হাজার টাকা।
জানা গেছে, তুরস্কে জন্মগ্রহণকারী ও কুর্দিশ-আর্মেনিয়ান বংশোদ্ভূত ৫০ বছর বয়সী কোসকুন নিজেকে নাস্তিক দাবি করেন। তিনি যুক্তরাজ্যের মিডল্যান্ডস এলাকা থেকে লন্ডনের নাইটসব্রিজের রাটল্যান্ড গার্ডেনসে এসে তুর্কি কনস্যুলেটের সামনে কোরআন পোড়ান ও চিৎকার করে ইসলাম ধর্ম নিয়ে বিদ্বেষমূলক কথা বলেন।
কোসকুন আদালতে বলেন, তিনি শান্তিপূর্ণভাবে প্রতিবাদ করেছেন ও কোরআন পোড়ানো মত প্রকাশের স্বাধীনতার অংশ। নিজের বিরুদ্ধে আনা ধর্ম অবমাননার অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি বলেন, তুরস্কের সরকারের বিরুদ্ধে এক ধরনের প্রতিবাদ হিসেবে তিনি এটা করেছিলেন।
তবে বিচারক ম্যাকগারভা বলেন, এই কাজটি ‘অত্যন্ত উসকানিমূলক’ ও তিনি অন্তত আংশিকভাবে মুসলিমদের প্রতি ঘৃণা থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে কাজটি করেছেন। এই ঘটনার জন্য একটি ‘অপরাধমূলক সাজা’ সম্পূর্ণ যথাযথ।
বিচারক আরও বলেন, ধর্মীয় গ্রন্থ পোড়ানো ও ইসলাম বা কোরআনের সমালোচনা সবসময় অপরাধ নয়। কিন্তু ঘটনাস্থল, সময় ও অপমানজনক ভাষার কারণে এটি জনশৃঙ্খলার ব্যাঘাত ঘটিয়েছে। তিনি বলেন, আমি নিশ্চিত যে অভিযুক্তের আচরণ মুসলিমদের প্রতি ঘৃণা থেকে এসেছে ও তা জনমনে আতঙ্ক ও উৎকণ্ঠা তৈরি করেছে।
কোসকুনের পক্ষে আইনি খরচ বহন করছে ন্যাশনাল সেক্যুলার সোসাইটি ও ফ্রি স্পিচ ইউনিয়ন। তারা আদালতের রায়কে মতপ্রকাশের স্বাধীনতার ওপর আঘাত বলে মন্তব্য করেছে ও রায় বাতিল করতে আপিলের ঘোষণা দিয়েছে।
এদিকে, মুসলিম অ্যাডভোকেসি গ্রুপ মুসলিম এঙ্গেজমেন্ট অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (এমইএনডি) বিচারকের রায় উদ্ধৃত করে মন্তব্য করেছে, বিদ্বেষমূলক মন্তব্য করতে পারাটাই মত প্রকাশের স্বাধীনতা নয়।
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর মুখপাত্র এ বিষয়ে সরাসরি মন্তব্য না করলেও বলেন, যুক্তরাজ্যে ধর্ম অবমাননার কোনো আইন নেই এবং এমন কোনো আইন চালু করার পরিকল্পনাও সরকারের নেই।
অন্যদিকে, দেশটির বিরোধীদল কনজারভেটিভ পার্টির নেত্রী কেমি বাডেনক বলেন, এই মামলায় অবশ্যই আপিল হওয়া উচিত। যুক্তরাজ্যে বিশ্বাস করার অধিকার যেমন রয়েছে, তেমনি অবিশ্বাস করার অধিকারও মানুষের মৌলিক অধিকার। আমি এই অধিকার রক্ষায় সর্বদা সোচ্চার থাকবো।
সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান