আমেরিকার ভোটে বাংলায় ছাপা হচ্ছে ব্যালট!
আমেরিকানরা তাদের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট বেছে নিতে প্রস্তুত। এবারের নির্বাচনে বাংলা ভাষার উজ্জ্বল উপস্থিতি। নিউইয়র্ক শহরে অন্তত ২০০ ভাষাভাষীর মানুষ থাকেন। এহেন নিউইয়র্কে, ২০২৪ সালের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ব্যালট পেপারে ইংরেজি ছাড়াও থাকছে আরও চারটি ভাষা। যার মধ্যে রয়েছে বাংলা ভাষাও। লড়াইটা মূলত রিপাবলিকান প্রার্থী ডনাল্ড ট্রাম্প বনাম ডেমোক্র্যাট প্রার্থী কমালা হ্যারিসের। ধনীতম দেশের দুই ধনকুবেরের লড়াইতেই এবার জুড়ে গেল বাংলা ভাষা।
বোর্ড অফ ইলেকশনের এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর মাইকেল রায়ান জানিয়েছেন, বহু ভাষাভাষীর বাসস্থান নিউইয়র্কে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ব্যালট পেপারে ইংরেজি ছাড়াও আরও চারটি ভাষা রয়েছে। জায়গা করে নিয়েছে বাংলা, চাইনিজ, স্প্যানিশ ও কোরিয়ান ভাষা। নিউ ইয়র্ক সিটি তার প্রাণবন্ত এবং বৈচিত্র্যময় জনসংখ্যার জন্য পরিচিত। এশিয়ান আমেরিকান ফেডারেশনের মতে, নিউইয়র্কে বসবাসকারী শহরের ৪৫ শতাংশ এশিয়ান আমেরিকানদের ইংরেজিতে সীমিত দক্ষতা রয়েছে। নিউইয়র্কে একটি উল্লেখযোগ্য বাংলাভাষী জনসংখ্যা রয়েছে, যেখানে ভারত ও বাংলাদেশ উভয়ের বাসিন্দা রয়েছেন।
এশিয়ান আমেরিকান ফেডারেশনের ২০২২ সালের একটি নিবন্ধ অনুসারে চীনা ভাষার (৫৩.৬ শতাংশ) পরে বাংলা নিউইয়র্কে দ্বিতীয় সর্বাধিক কথ্য এশিয়ান ভাষা (১২.২ শতাংশ)। নিউইয়র্কে ভোটারদের অংশগ্রহণকে উৎসাহিত করতে ব্যালট পেপারে বাংলা অন্তর্ভুক্ত করার পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। টাইমস স্কয়ারের একজন সেলস এজেন্ট শুভশেষ এই পদক্ষেপ নিয়ে আনন্দ প্রকাশ করেছেন। কারণ তার বাবা যিনি কুইন্সে থাকেন, ভোট দেয়ার সময় মাতৃভাষা খুঁজে পেয়ে উপকৃত হবেন। শুভশেষ বলছেন, ‘আমার মতো লোকেরা ইংরেজি জানে, কিন্তু আমাদের সম্প্রদায়ের অনেকেই তাদের মাতৃভাষায় বেশি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে। এতে ভোটকেন্দ্রে কাজ সহজ হবে। আমি নিশ্চিত যে আমার বাবা বাংলা ব্যালট দেখে উচ্ছ্বসিত হবেন।’
নিউইয়র্কের ব্যালটে বাংলা ভাষার অন্তর্ভুক্তি শুধু প্রতীকী নয়, আইনগত প্রয়োজনেও। রায়ান এই সিদ্ধান্তের প্রেক্ষাপট ব্যাখ্যা করেছেন। বাংলা ভাষার প্রবেশাধিকার নিয়ে একটি মামলা চলছিল। একটি নির্দিষ্ট জনসংখ্যার ঘনত্বের মধ্যে এই মামলার নিষ্পত্তির জন্য এশিয়ান ভাষা থাকা প্রয়োজন। তারপর কিছু আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে বাংলা ভাষার বিষয়ে মীমাংসাসূত্র বের করা হয়।’ প্রেসিডেন্টের ব্যালটে বাঙালির এই ঐতিহাসিক অন্তর্ভুক্তিটি ১৯৬৫ সালের ভোটাধিকার আইনের অধীনে একটি ফেডারেল নির্দেশনা অনুসরণ করে, ২০১৩ সালে কুইন্সে প্রেসিডেন্ট ব্যালটে প্রথম এই ভাষার উপস্থিতি দেখা যায়। দক্ষিণ এশীয়দের জন্য ভাষা সহায়তার প্রয়োজন ছিল, যাতে তারা নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় পুরোপুরি অংশগ্রহণ করতে পারে। এখন, আইন অনুসারে, নিউইয়র্ক সিটি নির্ধারিত পোল সাইটগুলোতে বাংলায় ভোটদানের উপকরণ সরবরাহ করতে বাধ্য। ফেডারেশন অফ ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ডা. অবিনাশ গুপ্ত বলেন, এটি বাংলা ভাষাভাষীর মানুষদের সাহায্য করবে।
সূত্র : ফার্স্টপোস্ট