যুক্তরাষ্ট্রে আদালত নির্বাচনের ফল নির্ধারণে ভূমিকা রাখবে বলে মনে করছেন না বিশেষজ্ঞরা
অনলাইন ডেস্ক: যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নির্বাচনের ভোট গণনা চলছে। বিজয়ী হওয়ার পথ ক্রমশ সংকুচিত হয়ে যাওয়ায় প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নির্বাচনের চূড়ান্ত ফলাফলের জন্য সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার হুমকি দিয়ে রেখেছেন। তবে আইনজ্ঞরা মনে করছেন নির্বাচনের ফলাফল হয়ত আদালতের বাইরেই নির্ধারণ হবে।
যুক্তরাষ্ট্রের আইনজ্ঞদের বরাতে রয়টার্স জানায়, নির্বাচনের দিন বা তার আগে পাওয়া পোস্টাল ব্যালটের গণনা বন্ধে ট্রাম্পের আহ্বান আদালত শুনবেন কিনা, সে নিয়ে সন্দেহ আছে। এ ছাড়া, মিশিগান বা পেনসিলভেনিয়ায় যেভাবে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই চলছে, তাতে করে আদালতের হস্তক্ষেপে বর্তমান অবস্থার পরিবর্তন নিয়েও যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে।
তার ওপর পেনসিলভেনিয়া ছাড়াই যদি বাইডেন ২৭০ ইলেক্টোরাল ভোট পেয়ে যান, তবে ওই রাজ্যে আইনি লড়াই ফলাফলের ওপর কোনো প্রভাব ফেলবে না বলে অভিমত আইনজ্ঞদের।
বুধবার সকালে বেশ কয়েকটি অঙ্গরাজ্যে ব্যালট গণনা শুরু হওয়ার পর, ট্রাম্প হোয়াইট হাউজে গিয়ে নিজেকে বিজয়ী বলে উড়ো দাবি করে বসেন। পোস্টাল ভোটেরও সমালোচনা করেন তিনি। কোনো প্রমাণ ছাড়াই এতে জালিয়াতি হয়েছে বলে অভিযোগ তোলেন তিনি। মার্কিন নির্বাচনে অবশ্য এ ধরনের তেমন কোন নজির নেই।
তবুও ট্রাম্প বলেন, ‘এর মধ্য দিয়ে জাতির সঙ্গে বড় প্রতারণা হচ্ছে। আমরা চাই আইনের সঠিক ব্যবহার। আমরা সুপ্রিম কোর্টে যাব। আমরা চাই ভোট গণনা বন্ধ হোক।’
ট্রাম্প জালিয়াতির অভিযোগে সুপ্রিম কোর্টে কী মামলা করবেন, তা না জানালেও, পেনসিলভেনিয়ায় দেরিতে আসা পোস্টাল ব্যালটের গণনা বন্ধ করতে সুপ্রিম কোর্টে তার সমর্থকরা একটি মামলা করেছেন। ভোট গণনা বন্ধে মিশিগানে এবং আরও কয়েকটি অঙ্গরাজ্যে রিপাবলিকানরা বিভিন্ন অভিযোগ দায়ের করেছেন।
তবে আইনজ্ঞরা বলেছেন, নির্দিষ্ট কিছু জায়গায় হয়তো ভোটদান ও গণনা পদ্ধতির বিষয়ে আপত্তি থাকতে পারে। তবে এ ধরনের অভিযোগ ভোটের চূড়ান্ত ফলাফল নির্ধারণে বাধা হবে কিনা, তা স্পষ্ট নয়।
ওহাইও স্টেট ইউনিভার্সিটির নির্বাচন আইন বিশেষজ্ঞ নেড ফলি বলেন, ২০০০ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে সুপ্রিম কোর্টের হস্তক্ষেপে ডেমোক্রেট প্রার্থী আল গোরের বিরুদ্ধে জর্জ ডব্লু বুশ চূড়ান্ত জয় পান। তবে, এবারের নির্বাচনে এমন কোনো পরিস্থিতি তৈরি হয়নি।
‘এই মুহূর্তে আপাতদৃষ্টিতে মনে হয় না যে সুপ্রিম কোর্টকে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে হবে,’ যোগ করেন তিনি।
তবে, রিপাবলিকান ও ডেমোক্রেট উভয় পক্ষই আইনি লড়াইয়ের জন্য আইনজীবীদের প্রস্তুত রেখেছেন।
বুধবার ট্রাম্পের অ্যাটর্নি জেনা এলিস ভোট গণনাকে চ্যালেঞ্জ করে ট্রাম্পের বক্তব্যের সমর্থনে বলেন, ‘আমাদের যদি আইনি চ্যালেঞ্জ পার হতে হয়, সেটা ব্যতিক্রম কিছু নয়। ফক্স বিজনেস নেটওয়ার্ককে একটি সাক্ষাৎকারে এলিস বলেন, ‘তিনি নিশ্চিত করতে চান যে নির্বাচনের ফল চুরি হচ্ছে না।’
সুপ্রিম কোর্ট এর আগে রিপাবলিকানদের আপিলের দ্রুত নিষ্পত্তিতে অস্বীকৃতি জানায়। তবে, রক্ষণশীল হিসেবে পরিচিত তিন জন বিচারপতি নির্বাচনের দিনের পর আবার মামলা নেওয়ার পথ উন্মুক্ত রেখেছেন।
আদালত যদি সে মামলা গ্রহণ করে এবং রিপাবলিকানদের পক্ষেও রায় দেন, তবুও পেনসিলভেনিয়ায় চূড়ান্ত ফল নির্ধারিত হবে ভোটের গণনাতেই। কারণ মামলায় কেবল ৩ তারিখের পর পাওয়া পোস্টাল ব্যালটের বিষয়ে অভিযোগ করা হয়েছে।
২০০০ সালে গোরের আইনজীবী ডেভিড বোইস বলেন, মিশিগান ও উইসকনসিনে বাইডেন জিতলে পেনসিলভেনিয়ার ফলাফল অপ্রাসঙ্গিক হয়ে যেতে পারে।