চূড়ান্ত বিব্রতকর পরিস্থিতিতে ভারত, করতে পারল না পঞ্চাশও!
স্পোর্টস ডেস্ক:
গতি, স্যুয়িং আর বাড়তি বাউন্সে ব্যাটসম্যানদের আতঙ্ক ছড়ালেন প্যাট কামিন্স-জস হ্যাজেলউড। প্রথম ইনিংসে ৫৩ রানের লিড পেয়েছিল ভারত। ম্যাচে মনে হচ্ছিল তারাই অনেকটা এগিয়ে। সেই হিসেব নিকেশ তৃতীয় দিনের শুরুতেই বদলে দিলেন কামিন্স -হ্যাজেলউড। দ্বিতীয় ইনিংসে বলই দেখল না ভারত। পড়ল চূড়ান্ত বিব্রতকর পরিস্থিতিতে।
গোলাপি বলের অ্যাডিলেডে টেস্টে ভারত দ্বিতীয় ইনিংসে করতে পেরেছে মাত্র ৩৬ রান। টেস্ট ইতিহাসে এটাই তাদের সর্বনিম্ন সংগ্রহ। এর আগে ১৯৭৪ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে লর্ডসে ৪২ রানে গুটিয়ে গিয়েছিল ভারত। সব মিলিয়ে টেস্টে এটি যৌথভাবে চতুর্থ সর্বনিম্ন দলীয় সংগ্রহ। পুরো ইনিংসে ভারতের একজন ব্যাটসম্যানও যেতে পারেননি দুই অঙ্কে। সর্বোচ্চ ৯ রান করেছেন ওপেনার মায়াঙ্ক আগারওয়াল।
ভারতীয় ব্যাটিংকে ছেলেখেলা বানিয়ে ৮ রানে ৫ উইকেট নিয়েছেন হ্যাজেলউড। ২১ রানে ৪ উইকেট গেছে কামিন্সের ঝুলিতে।
প্রথম ইনিংসে ৫৩ রানে পিছিয়ে থাকার পরও এই ম্যাচ জিততে মাত্র ৯০ রান করতে হবে অস্ট্রেলিয়াকে।
শনিবার ১ উইকেটে ৯ রান নিয়ে দিনের খেলা শুরু করেছিল ভারত। দিনের প্রথম ওভারেই নাইটওয়াচম্যান জাসপ্রিট বোমরাহকে ছেঁটে ফেলেন কামিন্স।
প্রথম ইনিংসে দৃঢ়তার প্রতিচ্ছবি ছিলেন চেতশ্বর পূজারা। এবার তিনি কাবু কামিন্সের দুর্দান্ত ডেলিভারিতে। মিডল আর অফ স্টাম্পে পড়া বল হালকা বেরিয়ে যাচ্ছিল। পূজারার ব্যাট পেতে দেওয়া ছাড়া উপায় ছিল না। ক্যাচ যায় উইকেটের পেছনে।
এরপরই শুরু হ্যাজেলউডের তোপ। তার বাড়তি লাফিয়ে উঠা বলে থতমত হয়ে মায়াঙ্ক আগারওয়াল ক্যাচ দেন কিপারের কাছে। আজিঙ্কা রাহানে অফ স্টাম্পে পড়ে হালকা বেরিয়ে বলে ব্যাট লাগিয়ে বিদায়। ১৫ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে চূড়ান্ত বিপদে পড়া দল বাঁচার উপায় খুঁজছিল অধিনায়ক বিরাট কোহলির ব্যাটে।
অধিনায়কও করেন হতাশ। কামিন্সের বলে ড্রাইভে প্রলুব্ধ হয়ে গালিতে ক্যাচ দিয়ে বিদায় ৮ বলে ৪ রান করা কোহলির। ১৯ রানেই পড়ে যায় ৬ উইকেট। টেস্ট ইতিহাসে সর্বনিম্ন ২৬ রানে অলআউট হওয়ার চরম বিব্রতকর রেকর্ড তখন চোখ রাঙাচ্ছে।
হনুমা বিহারি- ঋদ্ধিমান সাহায় তা পারই হওয়া গেছে কেবল। হ্যাজেলউড পর পর দুই বলে রবিচন্দ্রন অশ্বিন- আর ঋদ্ধিমানকে ফিরিয়ে দেন। পরে বিহারিকে ছেঁটে ৫ উইকেটও পুরো করেন তিনি। তার ছোট ছোট স্যুয়িং যেন ছিল বিষধর। ব্যাটসম্যানরা ছাড়বেন না খেলবেন এই দ্বিধায় পড়েছেন প্রতি বলেই।
শেষ উইকেটে আরও কিছু রান যোগ করেন মোহাম্মদ শামি আর উমেশ যাদব। ৫০ ছুঁতে পারাও যেন তখন বিশাল কিছু। সেটা হয়নি শামির চোটে। কামিন্সের বাউন্সারে হাতে আঘাত পেয়ে ব্যাটিং চালিয়ে যেতে পারেননি শামি। ৩৬ রানে ৯ উইকেট থাকলেও সেখানেই শেষ হয় ইনিংস।